ময়মনসিংহ গফরগাঁও উপজেলা পাগলা থানা নিগুয়ারী ইউনিয়ন চামুর্থা গ্রামে শামসুন্নাহারের জমি,জাল দলিল করে জমি দখলের পায়তারার অভিযোগ উঠেছে।
পাগলা থানা নিগুয়ারী ইউনিয়নে একই গ্রামের মৃত আব্দুল বাতেনের দুই সন্তান আমানউল্লাহ এবং আব্দুল্লাহ হাসানের বিরুদ্ধে।
শামসুন্নাহার জানান, আমানউল্লাহ এবং হাসান দুই ভাই মিলে ভুয়া বিক্রেতা সাজিয়ে প্রতিজনকে পঞ্চাশ হাজার টাকা করে দিয়ে জাল দলিল তৈরি করে এবং নিজে ক্রেতা সেজে জমি ক্রয় করেন। উক্ত ৩১ শতাংশ জমি ক্রয় করে হঠাৎ করে দখলের চেষ্টা চালালে ভুয়া জাল দলিলের তথ্য ফাঁস হয়ে যায়।
এঘটনায় জমির প্রকৃত মালিক শামছুন্নাহার বাদী হয়ে আদালতে দলিল বাতিলের একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার বিবরণে থেকে জানা যায়, গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানাধীন নিগুয়ারী ইউনিয়নের চামুর্থা গ্রামের অললী মৌজার সি.এস ১১৮ এবং এস.এ ১৪৯ খতিয়ান নাম্বার ১, দাগ নং ৪৭৭ যার হালনাগাদ নাম্বার ১৬১৮ এর স্থায়ীসুত্রে প্রাপ্ত মুল মালিক শামছুন্নাহার। তিনি অত্র দাগে ৩১ শতাংশ জমির প্রকৃত মালিক।
নিগুয়ারী ইউনিয়ন চামুর্থা গ্রামের আমানউল্লাহ এবং হাসান ৩১ শতাংশ জমির ভুয়া জাল দলিল করে আটজনকে জমির মালিক বানায়, শ্রীপুর উপজেলার বরমী বাজারের ১.সন্ত চন্দ্র বর্মন ২. সুকুল চন্দ্র বর্মন ৩. শোসেন চন্দ্র বর্মন ৪.বিকাশ চন্দ্র বর্মন পিতা খগেন্দ্র চন্দ্র দাস, ৫. শুধাংশু বর্মন ৬. হিমাংশু বর্মন ৭. শংকর ৮. খোকন বর্মন, সর্বপিতা নগেন্দ্র বর্মন। উল্লেখিত আটজনকে মালিক বানিয়ে গত ১৮/০৬/২০২০ইং তারিখে আমানউল্লাহ এবং আবদুল্লাহ হাসান দুজনের নামে জাল দলিল করিয়ে নেয়। যার দলিল নং- ১০৯২।
শামছুন্নাহার জানান, আমাদের পরিবার দীর্ঘদিন ধরে ময়মনসিংহ শহরে বসবাস করার কারণে গ্রামে আসার সুযোগ হয়নি, এই সুযোগে ক্রেতা সেজে আমানউল্লাহ এবং আবদুল্লাহ হাসান সুকৌশলে উল্লেখিত আটজন ব্যক্তিকে ভুয়া মালিক বানিয়ে ৩১ শতাংশ জমি নিজেদের দুই ভাই আমানউল্লাহ এবং হাসানের নামে রেজিস্ট্র করেন এবং জমি দখলের পায়তারা করেন।
তিনি আরও বলেন, ১৯৫৬ সালে মহেন্দ্রের কাছ থেকে রামচরন জমি ক্রয়সূত্রে কিনেন এবং রামচরন ১৯৬১ সালে মমতা বর্মনের কাছে জমিটি বিক্রি করেন। মমতা বর্মণ ১৯৬১ সালে ৩১ শতাংশ জমি বিক্রি করেন আমার স্বামী মৃত আব্দুল হামিদের কাছে, ৬৭৫ নং খারিজি খতিয়ানে যৌথভাবে ১৯৬১ সাল থেকে খাজনা পরিশোধ করে আসতেছি।
ময়মনসিংহে পরিবার নিয়ে থাকার কারণে এজমিটি ইটভাটা মালিক হাবিবুর রহমানের কাছে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। যার বাজার মূল্য জমির প্রায় ছয় লক্ষ ষাট হাজার টাকা।
উল্লেখ্য যে মহেন্দ্র চন্দ্র দাস, জিতেন্দ্র দাস,ধীরেন্দ্র চন্দ্র দাস মারা যাওয়ার পর বংশপরম্পরায় শ্রাবতী রানী ব্যতীত তাদের আর কোন উত্তরসূরি বাংলাদেশে নেই। পরবর্তীতে এই জমি তিনজন হিন্দু ধর্মের লোকের নামে রেকর্ড হলে,এরই প্রেক্ষিতে বিবাদী আমানউল্লাহ এবং হাসান এই লোভনীয় সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভুয়া জাল দলিল তৈরি করে এবং কয়েকবার এ জায়গা দখলের চেষ্টা করেন। ইটভাটা মালিক হাবিবুর রহমান বাঁধা দেওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। এব্যাপারে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ গ্রামবাসীরা কয়েকবার সমাধানের চেষ্টা করেন কিন্তু আমানউল্লাহ এবং হাসান গং না আসায় সমাধান করা সম্ভব হয়নি।
আমানউল্লাহ এবং হাসান ভুয়া জাল দলিল দেখিয়ে জমির মালিকানা দাবি করলে জমির প্রকৃত মালিক শামসুন্নাহার ২৯/০৬/২০২০ ইং তারিখে নকল তুলেন এবং জাল দলিল দেখে উক্ত দলিলটি আমানউল্লাহ এবং হাসানের নহে মর্মে ঘোষনামূলক ডিক্রির দাবিতে মোকদ্দমায় নির্দিষ্ট কোর্ট ফি জমা দিয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি চলমান।
অনুসন্ধানে জানা যায় যে, উক্ত জমির আটজন মালিকের দাবিকৃত একজন মালিক শংকরের ভিডিও রেকর্ডে স্পষ্ট বলেছেন আমানউল্লাহ এবং শামীম আমাদের পিছনে বহুদিন ধরে ঘুরে একটি দলিলে সাক্ষর নেয় এবং পঞ্চাশ হাজার টাকা দেয়। এবিষয়ে মুখ খুলতে বারণ করেছেন আমানউল্লাহ এবং আব্দুল্লাহ হাসান।
এবিষয়ে আবদুল্লাহ হাসানের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে জানান, প্রকৃত মালিকদের ভয় দেখানো হচ্ছে এবং আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বলাতে হুমকি দিচ্ছে। উক্ত ৩১ শতাংশ জমিটির বিষয়ে আদালতে মামলা চলমান বলে ফোন রেখে দেন।
আরও পড়ুনঃ চিরিরবন্দরে নিজেকে আত্মগোপন করেঃ অপহরণের নাটক মাঠকর্মী মামুনের